‘জামায়াতে ইসলামী দেশকে ইসলামী কল্যাণেরাষ্ট্রে পরিণত করতে বদ্ধপরিকর’ বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন।
তিনি আজ মঙ্গলবার মিরপুর পশ্চিম ও কাফরুল পশ্চিম থানার উদ্যোগে আয়োজিত ‘আত্নকর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও নবীন উদ্যোক্তাদের’ মাঝে আর্থিক সহায়তা, রিক্সা, ভ্যান ও বিভিন্ন উপকরণ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি বক্তব্যে এসব কথা বলেন। অনুষ্ঠান দু’টিতে ঢাকা মহানগরী উত্তরের মজলিসে শূরা সদস্য যথাক্রমে মিরপুর পশ্চিম থানা আমীর হাকিম আব্দুল মান্নান ও কাফরুল পশ্চিম থানা আমীর আব্দুল মতিন খানের সভাপতিত্বে এবং মিরপুর পশ্চিম থানা সেক্রেটারি জসিম উদ্দিন ও কাফরুল পশ্চিম থানা সেক্রেটারি খান হাবিব মোস্তফার সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও মহানগরী নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মুসা, কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও মহানগরী উত্তরের সহকারী সেক্রেটারি যথাক্রমে লস্কর মোহাম্মদ তাসলিম ও মাহফুজুর রহমান। আরো উপস্থিত ছিলেন মিরপুর পশ্চিম থানা নায়েবে আমীর তাজিরুল ইসলাম, থানা শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য হাফেজ মাওলানা ফরহাদ হোসাইন, মোহাম্মদ আলী বিশ্বাস, আল-আমিন এবং কাফরুল পশ্চিম থানার শুরা ও কর্মপরিষদ সদস্য সুলতান মাহমুদ ও রায়হান উদ্দিন প্রমূখ।
সেলিম উদ্দিন বলেন, আমরা মহান আল্লাহর কাছ থেকে এসেছি আবার তাঁর কাছেই ফিরতে হবে। তাই তার সন্তষ্টি অর্জন করে এবং নিজেরা সন্তষ্ট হয়ে যাতে তার কাছে ফিরতে পারি সেভাবেই কাজ করতে হবে। দুনিয়া কোন হাসি-তামাশার জায়গা নয়। তাই এখানে আমাদেরকে ইবাদত-বন্দেগীর মাধ্যমে আখেরাতের পাথেয় সংগ্রহ করতে হবে। আল্লাহ তা’য়ালা পবিত্র কুরআনের সূরা আল ইমরানের ১১০ নাম্বার আয়াতে বলেছেন, ‘তোমরাই সর্বশ্রেষ্ঠ জাতি, যাদেরকে মানবকল্যাণের জন্য বাছাই করা হয়েছে।’ আর আল্লাহ তায়ালার সে নির্দেশনা অনুযায়ি ঢাকা মহনগরী উত্তর জামায়াত বেশ কিছু ইতিবাচক পদক্ষেপ হাতে নিয়েছে। এসবের উল্লেখযোগ্য হলো, গরীব কিন্তু সক্ষম ব্যক্তিদেরকে কিছু পুঁজি দিয়ে তাদের কর্মসংস্থানের ব্যাবস্থা করা যেন তারা স্বাবলম্বী হতে পারে। সেজন্যই আজকের এই আয়োজন।
তিনি বলেন, মানুষ যখন বিপদে পড়ে তখন কেউ তার পাশে দাঁড়ালে বিপদ কাটিয়ে ওঠা তার জন্য সহজ হয়ে যায়। ইসলাম বিপদে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর নির্দেশনা দিয়েছে। বিশেষ করে আত্নীয়স্বজন ও প্রতিবেশীদের বিপদে পাশে দাঁড়ানোর জন্য জোর তাগিদ দেওয়া হয়েছে। ইসলাম সকল মুমিনদেরকে বেশি বেশি করে সাদকা করার কথা বলেছে। কারণ, তাদের সম্পদ তাদের একার না, এর মধ্যে গরীব-দুঃখীদেরও হক রয়েছে। সরকার যদি শুধুমাত্র যাকাতের টাকা সংগ্রহ করে কাজে লাগাতো তাহেলেই দেশের দারিদ্র বিমোচন হয়ে যেত। জামায়াতে ইসলামী সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এগিয়ে যাচ্ছে। তাই আজ দেশের সর্বস্তরে আওয়াজ উঠছে, ‘আগামী দিনে দরকার জামায়াতে ইসলামীর সরকার’। বাংলাদেশের জনগণকে সাথে নিয়ে আগামী দিনে জামায়াত একটি দুর্নীতিমুক্ত, স্বচ্ছ ও জবাবদিহিমূলক প্রশাসন এবং শাসনব্যবস্থা গড়ে তুলতে চায়। তিনি সেই স্বপ্নের সমাজ বিনির্মাণে সকলকে জামায়াতের পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।
মহানগরী আমীর বলেন, আল্লাহ তা’য়ালা বাংলাদেশকে অমূল্য সম্পদে ভরপুর করে রেখেছেন। এদেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হলো দেশের জনশক্তি। এদের একটা বড় অংশ যুবক এবং কর্মঠ। দেশের যুব শক্তিকে যদি যথাযথভাবে কাজে লাগানো যেত, এদেশের শিক্ষাব্যবস্থাকে যদি কর্মমূখী করা যেত, তাহলে আজকে মানুষকে কারো কাছে হাত পাততে হত না। তরপরও এদেশের অনেক অগণিত মানুষ অনাহারে-অর্ধাহারে জীবন যাপন করছেন। এর অন্যতম কারণ, শাসক শ্রেণির পরকালে জবাবদিহীর অনুভূতির অভাব। তাছাড়া দেশের শিক্ষাব্যবস্থায় নৈতিক শিক্ষার উপস্থিতি নেই বললেই চলে। যেটুকু ছিল সেটিও প্রায় ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। ফলে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা, স্বজনপ্রীতির বলি হয়েছে এদেশের জনগণ।
তিনি বলেন, অনেক এমপি-মন্ত্রী রয়েছেন, যাদের ছেলেমেয়ে বিদেশে পড়াশুনা করে। ফলে এদেশের শিক্ষাব্যবস্থার প্রতি তাদের কোন ভ্রূক্ষেপ নেই । তাই আগামী দিনে জনগণকে এমন পরিস্থিতি থেকে উদ্ধারের জন্য প্রয়োজন জনদরদী সরকার যারা এদেশে থেকে পরগাছার মত আচরণ করবে না। মূলত, দেশকে ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্রে পরিণত করতে জামায়াতে ইসলামী সবসময়ই আপোষহীন। তাই জামায়াতে ইসলামীর দাওয়াত প্রতিটি ঘরে-ঘরে পৌছে দেওয়া আমাদের সকলের নৈতিক দায়িত্ব। তিনি দ্বীন বিজয়ের লক্ষ্য সকলকে এক মঞ্চে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবান জানান।