বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত আমীর ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মুজিবুর রহমান বলেন, জান্নাতে যেতে হলে ঈমান হতে হবে পূর্ণ। ঈমানের উপর দাঁড়িয়ে যেতে হবে। লা ইলাহা ইল্লালাহর ব্যাপকতা অনেক গভীর। আমাদেরকে পরিপূর্ণ মুমিন হতে হবে। আমাদেরকে আখেরাতে যাওয়ার জন্য প্রস্তুতি নিতে হবে। আমরা টাকার গোলাম না হয়ে আল্লাহর গোলাম হবো। আমরা আল্লাহর গোলামী করার জন্য জীবনটা ব্যয় করে দেব। শেষ রাতে উঠে আল্লাহর কাছে চোখের পানি ফেলে আমরা আল্লাহর রাসূলের সেই হাদীস অনুসরণ করব।
তিনি আরও বলেন,আমরা গভীর উদ্বেগের সাথে লক্ষ্য করছি যে, বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ইসলাম ও মুসলমানদের বিরুদ্ধে গভীর ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। বিভিন্ন দেশে মুসলমানদের উপর অত্যাচার নির্যাতন চালানো হচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় সুইডেনে পবিত্র কুরআন পোড়ানো হয়েছে, যা ধর্মীয় অনুভূতির উপর মারাত্মক আঘাত।এ সকল ষড়যন্ত্রের মোকাবিলায় আমাদেরকে ঐক্যবদ্ধভাবে ভূমিকা রাখতে হবে।
শুক্রবার সকাল আটটায় বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী উত্তর আয়োজিত ভার্চুয়ালি কর্মী সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতের নায়েবে আমীর ডা. সৈয়দ আব্দুল্লাহ্ মুহাম্মদ তাহের বলেন, বাংলাদেশে বর্তমানে মানুষের কোন অধিকার নেই। এখানে নেই নির্বাচন ভোট। বাংলাদেশ গণতন্ত্রহীনতার দেশ, অধিকারহীন দেশ, রাতে ভোট হওয়ার দেশ । এখন এটাই বাংলাদেশ। এখন নতুন করে শুরু হয়েছে স্যাংশনের বাংলাদেশ। আমাদের দেশের ভবিষ্যৎ এখন কালো অন্ধকারে ঢাকা। পাঠ্যপুস্তকে ইসলাম বিদ্বেষ ছড়িয়ে শিশুদেরকে ধর্মহীনতার দিকে নেয়ার চেষ্টা চলছে। এই দেশের এই ক্রান্তিকালে মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমাদেরকে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এটিএম মাসুম বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র ইসলাম নিশ্চিহ্ন করণের কাজ চলছে। একাজে রাষ্ট্রশক্তি তাদের নিজেদের সম্পূর্ন শক্তি নিয়োগ করেছে। সমাজের সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সংস্কৃতিক তথা সকল স্থান থেকে আমাদের সন্তানদের ভালো মুসলিম হওয়া ও ইসলাম থেকে দূরে সরিয়ে নেয়ার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। নব্বই ভাগ মুসলমানদের দেশে তাদের কার্যকলাপ যদি চলতে থাকে তাহলে আল্লাহর গজব থেকে এ জাতিকে বাঁচানোর কোন উপায় থাকবে না।
তিনি বলেন, বাংলাদেশ এটি হঠাৎ করে সৃষ্টি হয়নি। স্বাধীনতার পূর্ব এবং এরও শত শত বছর আগে মুসলিম জাতি সত্তার বিচরণ ক্ষেত্র হিসেবে আমরা দেখতে পাই। এখানে হাজী শরীয়তুল্লাহ, তিতুমীর, শাহ জালাল র. আন্দোলন করেছেন। এখানেই শহীদ আবদুল মালেক নিজের স্বপ্নকে বিসর্জন দিয়েছেন। এখানেই তার একান্ত সাথী মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী জীবন দিয়েছেন। এখানেই তাদের অনেক সঙ্গী সাথী জীবন দিয়েছেন। তাদের ঐতিহ্য ধারণ করে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে।
জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল হামিদুর রহমান আযাদ বলেন, বাংলাদেশের মানুষের অধিকার নেই। স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারছে না। আমরা যে সমাজে বসবাস করছি, এই সমাজে যদি ঈমান এবং আমলের সাথে বেঁচে থাকতে হয়, তাহলে আমাদেরকে এই সমাজ পরিবর্তন করতে হবে। প্রতিটি অলিতে গলিতে মানুষের দ্বারে দ্বারে দাওয়াত ও সেবার কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। পরিবেশ প্রতিকূল, পরীক্ষা অনেক কঠিন। জুলুম নির্যাতন আছে। রাজনীতির নোংরা খেলা আমাদের যাতে বিভ্রান্ত করতে না পারে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিম বলেন, মক্কার অনেক মুশরেক মুসলমানদের মোকাবেলায় গর্ব করে বলতো যে, আমরা মসজিদে হারামের আবাদ করছি, হাজীদেরকে পানি পান করাই এটাইতো আমাদের শ্রেষ্ঠত্ব। এর চেয়ে বড় কাজ আর কি হতে পারে। আমাদের সমাজে এরকম কিছু লোক রয়েছে যাদের ধারণা কিছু কিছু নফল কাজ কিছু বাহ্যিক চিত্বাকর্ষক আমল করে মনে করে জিহাদের প্রয়োজন নেই।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, আল্লাহর আইন ও হুকুম অনুযায়ী সমাজ এবং রাষ্ট্র পরিচালনা করতে হলে রাষ্ট্রিয় ক্ষমতা আমাদের এই আন্দোলনের হাতেই আসতে হবে। ক্ষমতার বাইরে থেকে এটা কখনোই পূর্ণাঙ্গভাবে করা যাবে না।
কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সেক্রেটারী ড. রেজাউল করিমের সঞ্চালনায় সম্মেলনে আরও বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় কর্মপরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের নায়েবে আমীর আব্দুর রহমান মূসা। সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মহানগরীর নায়েবে আমীর ইঞ্জিনিয়ার গোলাম মোস্তফা, সহকারী সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান, নাজিম উদ্দিন মোল্লা, ডা. ফখরুদ্দিন মানিক, মহানগরীর কর্মপরিষদ ও মজলিশে শূরা সদস্য এবং অন্যান্য দায়িত্বশীলরা।