বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেছেন, বুদ্ধিজীবীরা দেশের শ্রেষ্ট সম্পদ। তাদের মেধা, মনন, প্রজ্ঞা ও মনীষা দেশ ও জাতিকে দিকনির্দেশনা দিয়ে থাকে। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে মহান বিজয়ে মাত্র ২ দিন আগে জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান বুদ্ধিজীবীদের নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করে জাতিকে মেধাশুণ্য করার ষড়যন্ত্র করা হয়েছে। তিনি শহীদ বুদ্ধিজীবীদের যথাযথ মর্যাদায় শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন এবং শহীদদের পরিবার-পরিজনের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
আজ বুধবার রাজধানীর একটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী ঢাকা মহানগরী আয়োজিত শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিলে সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন। আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন ঢাকা মহানগরী মজলিশে শুরা সদস্য ড. আহসান হাবীব, রমনা থানা সেক্রেটারি আবু জিসান, জামায়াত নেতা আতাউর রহমান সরকার ও আখতার হোসাইন প্রমুখ।
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, দীর্ঘ মুক্তিসংগ্রামের মাধ্যমে বিজয় অর্জনের পর যারা জাতিকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকান্ডের নেপথ্যের শক্তি। স্বাধীন বাংলাদেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথাসাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হারের অন্তর্ধান এখনও রহস্যাবৃত। তার কী পরিণতি হয়েছে এখন পর্যন্ত তা নিশ্চিত হওয়া যায়নি। মূলত জহির রায়হান বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রত্যক্ষদর্শী ছিলেন বলেই রহস্য প্রকাশ হওয়ার আগেই তাকে অপহরণ ও হত্যা করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৪ দশক পরেও দেশপ্রেমিক বুদ্ধিজীবীরা নানাভাবে জুলুম-নির্যাতনের স্বীকার হচ্ছেন। বুদ্ধিজীবী হত্যাকান্ড ও অপহরণের ঘটনার সাথে কারা জড়িত জাতি তা জানতে চায়। ধারণা করা হয় যে, শহীদ জহির রায়হানের কাছে মুক্তিযুদ্ধের বিভিন্ন দলিল-দস্তাবেজ, ডকুমেন্টারী-প্রামাণ্য চিত্র সংরক্ষিত থাকার কারণেই তাকে অপহরণ ও পরবর্তীতে তাকে হত্যা করা হয়েছে। এসব তথ্য-উপাত্ত জাতির কাছে প্রকাশ পেলে যাদের থলের বিড়াল বেরিয়ে আসার আশঙ্কা ছিল, মূলত তারাই এসব হত্যাকান্ড ও অপকর্মের সাথে জড়িত। তিনি এই অপশক্তি সম্পর্কে জনগণকে সতর্ক থাকার আহবান জানান।
তিনি আরও বলেন, ক্ষমতাসীনরা শহীদ বুদ্ধিজীবী রহস্য উদঘাটনের চেষ্টা না করে এই ইস্যুকে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েলের হাতিয়ার বানিয়েছে। সরকারের অপরাজনীতির অংশ হিসাবেই মিথ্যা অভিযোগে প্রহসনের মাধ্যমে বিশ্ববরেণ্য আলেমে দ্বীন, সাবেক সফল মন্ত্রী ও সাবেক আমীরে জামায়াত মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদ, সাবেক সহকারি সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান ও আব্দুল কাদের মোল্লা এবং কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মীর কাসেম আলীকে নির্মম ও নিষ্ঠুরভাবে হত্যা করেছে। মূলত চক্রান্তকারীরা জাতীয় নেতৃবৃন্দকে হত্যা করে দেশকে পরাশ্রয়ী করদরাজ্য বানাতে চায়। তিনি শহীদদের ত্যাগ ও কুরবানীকে কবুল করতে মহান আল্লাহ তায়ালার দরবারে দোয়া করেন এবং বুদ্ধিজীবী হত্যার প্রকৃত রহস্য উদঘাটনে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহবান জানান।