রহমত, মাগফিরাত ও জাহান্নামের আগুন থেকে মুক্তির মাস পবিত্র মাহে রমযানের শিক্ষাকে যথাযথভাবে কাজে লাগিয়ে আত্মগঠন ও তাক্বওয়া অর্জনের আহ্বান জানিয়েছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমীর মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন। পবিত্র মাহে রমযানকে স্বাগত এবং নগরবাসীকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করে এক বাণীতে মহানগরী আমীর এসব কথা বলেন।
মুহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, নিঃসন্দেহে রমযান হলো সর্বোত্তম মাস। এ মাসে আল্লাহ তায়ালা মহাগ্রন্থ আল কুরআন অবতীর্ণ করেছেন। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘রমযান মাস হলো সে মাস, যে মাসে কুরআন নাজিল করা হয়েছে। যা মানুষের জন্য হেদায়েত এবং সত্যপথ অনুসারীদের জন্য সুস্পষ্ট পথনির্দেশক; আর ন্যায়-অন্যায়ের মধ্যে পার্থক্য বিধানকারী। কাজেই তোমাদের মধ্যে যে এ মাসটি পাবে, সে রোজা রাখবে….। (সূরা আল বাকারাহ, আয়াত-১৮৫)। হাদিসে কুদসীতে বলা হয়েছে, আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘বান্দার সব আমল তার নিজের জন্য; কিন্তু শুধু রোজা আমার জন্য। তাই আমি নিজ হাতেই এর প্রতিদান দেব।’ (সহীহ আল বোখারি, হাদিস নং-১৯০৪)। অন্যত্র বলা হয়েছে, রাসূল (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি রমযান মাসে আল্লাহর প্রতি পূর্ণ বিশ্বাস রাখে এবং সওয়াব লাভের আশায় রোজা রাখে, আল্লাহ তার সব গোনাহ মাফ করে দেন।’ ( সহীহ আল বোখারি, হাদিস-২০১৪)।
তিনি বলেন, পবিত্র মাহে রমযানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে দ্রব্যমূল্য হ্রাস করা হলেও রমযান শুরুর আগেই আমাদের দেশে ব্যাপকভাবে মূল্যস্ফীতি ঘটেছে। বাজার নিয়ন্ত্রণে খাদ্য ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় এবং ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থাকলেও এসব সংস্থা তেমন সফলতা দেখাতে পারেনি। অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে রমযান কেন্দ্রীক পণ্যের মূল্য। মূলত, আওয়ামী বাকশালীদের পতনের পরও তাদের গঠিত সিন্ডিকেট ও প্রতিভূরা বাজারে এখনো সক্রিয় রয়েছে। ফলে বাজার পরিস্থিতি এখনো অশুভ বৃত্তেই রয়ে গেছে। তাই দেশের সাধারণ মানুষ যাতে যথাযথভাবে সিয়াম পালন করতে পারে এজন্য অনতিবিলম্বে সরকারকে বাজার নিয়ন্ত্রণে জরুরি ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। একই সাথে মাহে রমযানের পবিত্রতা রক্ষায় দিনের বেলা হোটেল- রেস্তোরাঁ বন্ধ, গণমাধ্যমে অশ্লীলতা ও বেহায়াপনা পরিহার করে মাহে রমজানের পবিত্রতা ও পরিবেশ যথাযথভাবে রক্ষা করতে হবে। তিনি পবিত্র মাহে রমযানের মর্যাদা ও রক্ষায় অন্তর্বর্তী সরকারকে কার্যকর ভূমিকা পালনের আহ্বান জানান।
তিনি আরো বলেন, মূলত এ মহিমান্বিত মাস দোয়া কবুল ও নাযাতের মাস। তাই এ মোবারক মাসে সিয়াম ও কিয়াম পালনের মাধ্যমে আল্লাহ তায়ালার কাছে বেশি বেশি চাইতে হবে। মানুষ যাতে তাকওয়া অর্জনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি লাভ করতে পারে এজন্যই সিয়ামকে আমাদের জন্য অত্যাবশ্যকীয় করে দেয়া হয়েছে। কালামে হাকীমে বলা হয়েছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমাদের ওপর রোজা ফরজ করা হয়েছে, যেরূপ ফরজ করা হয়েছিল তোমাদের পূর্ববর্তী লোকদের ওপর। যেন তোমরা তাকওয়া অর্জন করতে পারো।’ (সূরা আল বাকারা, আয়ত-১৮৩)। তাই প্রত্যেক মুমিনের উচিত মাহে রমযানের হক যথাযথ ভাবে আদায় করে আত্মশুদ্ধি ও তাযকিয়া অর্জনের মাধ্যমে ইহকালীন কল্যাণ ও পরকালীন মুক্তি অর্জন করা। তিনি এই মোবারক মাসকে স্বাগত জানান এবং এ উপলক্ষে নগরবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন।